কাঠঠোকরা পাখীদের একটু চেষ্টা করলেই তোমরা বাগানে দেখতে পাবে। এরা গাছের গায়ে নখ আটকিয়ে ঠোকর মারে। এইজন্যেই এদের নাম কাঠঠোকরা। অনেক কাঠঠোকরার মাথায় ঝুঁটি থাকে। এদের ঠোঁট খুব লম্বা ও পায়ের নখ বেশ ধারালো হয়। গাছের শুকনো পচা ডালপালার ভিতরে যে সব পোকামাকড় থাকে, তাই এদের প্রধান আহার। সেইজন্য ওরা গাছের গায়ে পা ও
লেজ লাগিয়ে কাঠে ঠোকর দেয় যাতে পচা ও শুকনো কাঠের নিচে যে সব পোকামাকড় থাকে, সেগুলো বের হয়ে পড়ে। কাঠঠোকরার জিভ খুব লম্বা আর জিভের ডগায় থাকে সূচের মত কাঁটা আর এক রকমের আঠা। সেই কাঁটায় বিধিয়ে ও আঠায় জড়িয়ে এরা পোকাদের মুখে পোড়ে।
ভারতবর্ষে প্রায় ৫৬ প্রজাতির কাঠঠোকরা দেখা যায়। গা সাদা ও কালো পালকে ঢাকা এবং মাথায় লাল ঝুঁটিওয়ালা কাঠঠোকরা সাধারণত আমাদের নজরে পড়ে। একটু ভালো করে লক্ষ করলে তোমরা এদের মাথার পালকগুলিতে হলদে ও পেটের কয়েকটি জায়গায় লাল দেখতে পাবে। লাল ঝুঁটি কিন্তু পুরুষ কাঠঠোকরাদেরই থাকে। কাঠঠোকরা ভাল উড়তে পারে না। এদের ওড়ার ভঙ্গী কতকটা ঢেউয়ের মত। এগুলি ছাড়া যে কাঠঠোকরা দেখা যায়, তাদের গায়ের রঙ খয়েরি।
অন্য পাখিরা যেমন খড়কুটো ও লতাপাতা দিয়ে বাসা তৈরি করে, কাঠঠোকরারা তা করে না। তারা বাটালির মত ধারালো ঠোঁট দিয়ে গাছের গুড়ি কুড়ে গর্ত করে, এই গর্তেই তাদের বাসা। পাখীদের বাসা সাধারণত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়। তাতে কোন ময়লা জিনিস থাকে না। কিন্তু কাঠঠোকরার বাসায় ঠিক তার উলটো। এদের কোটরগুলি বিষ্ঠা, গায়ের খসা পালক, এবং পোকামাকড়ের শরীরের খোলায় ভরতি থাকে। এইসব জিনিস পচলে বাসাগুলিতেও দুর্গন্ধ হয়।
কাঠঠোকরার ডিমগুলি হয় সাদা। এরা স্ত্রী পুরুষ দুইয়ে মিলে বাচ্চাদের বড় করে এবং যখন গাছের গুড়ি কুড়ে বাসা তৈরি করতে হয়, তখন স্ত্রী - পুরুষে মিলে পরিশ্রম করে। কেউ কাউকে ফাকি দিতে চায় না । এগুলি সব ভাল, তবে এদের গলার স্বর একটুও ভাল নয়। এদের গলার ক্যাচ ক্যাচ শব্দে যেন কান জ্বালা করে!
সৌজন্যে - www.abasar.net